বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:২৫ অপরাহ্ন

পীরগাছা হানাদার মুক্ত দিবস আজ

স্টাফ রিপোর্টারঃ আজ ১১ ডিসেম্বর রংপুরের পীরগাছা উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে পীরগাছা থেকে পালিয়ে যায়। ভোরে মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয়ের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে পীরগাছা উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।

পীরগাছা উপজেলা ছিল পাকিস্তানি হানাদারের শক্ত ঘাঁটি। পাকিস্তানি সেনা, মিলিশিয়া বাহিনী এবং এ দেশীয় দোসর রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা মিলিত ভাবে মার্চ মাসের শুরু থেকেই গ্রামে গ্রামে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটসহ নির্বিচার হত্যাকাণ্ড চালায়।

৬ ডিসেম্বর বিকেলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা চৌধুরানী হাই স্কুল মাঠে অবস্থান নিলে পাক হানাদার বাহিনী সংবাদ পেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর আক্রমণ চালায়। ডিনামাইড দিয়ে চৌধুরানী রেল স্টেশনটি উড়িয়ে দেয় ও আশ-পাশের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করে।

মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিরোধ গড়ে তুললে পাকবাহিনী পিছু হটে রংপুর যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় লোহার ব্রিজ সংলগ্ন ঘাঘট নদীর তীরে অবস্থানরত অপর একটি মুক্তিযোদ্ধা দল তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী যুদ্ধ চলাকালে পাকবাহিনী পিছু হটে পালিয়ে যায়। এ সময় আব্দুল মজিদ নামের এক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং পাকবাহিনীর অনেক সদস্য হতাহত হন।

মুক্তিযোদ্ধারা পীরগাছা বাজারস্থ তৎকালীন ছায়াবীথি ক্লাবে পাক বাহিনীর ক্যাম্প থেকে রাজাকার আলবদরসহ ১৭ জনকে আটক করেন। পরে পীরগাছা থানার প্রবেশ পথে তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়।

অবশেষে ১১ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তিযোদ্ধারা পীরগাছা থানা ঘেরাও করলে অবস্থা বেগতিক দেখে পাক সেনারা পালিয়ে গেলে পীরগাছা উপজেলা শক্রমুক্ত হয়। এদিকে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে ভবেশ চন্দ্র বর্মণ, আবু বক্কর সিদ্দিক, ওমর আলী সরকার, সুরুজ মিয়া, সিদ্দিকুর রহমান, মোসলেম উদ্দিন ও নজির হোসেনসহ আরো অনেক নাম না জানা মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষ শহীদ হন।

এ দিনটি ঘিরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com